গতকাল (রোববার) মুসলিম ও ইউরোপীয় প্রথম এবং আমেরিকা ও গুয়াতেমালার পর, তৃতীয় দেশ হিসেবে দখলদার ইসরাইলের রাজধানী জেরুজালেমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের দূতাবাস চালু করেছে কসোভো। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দূতাবাস খোলা হয়েছে। তখন জেরুজালেমে দূতাবাস ভবনের সামনে কসোভোর জাতীয় পতাকা উড়ানো হয়। এ দূতাবাস উদ্বোধন করে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে (ট্রাম্প) দেয়া অঙ্গীকার পূরণ করেছি আমরা।
কসোভোকে ইসরাইলের স্বীকৃতির বিনিময়েই জেরুসালেমে নিজেদের দূতাবাস খুললো দেশটি। এ স্বীকৃতিকে কসোভো তাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বিজয় বলে মনে করছে। ১৯৯০-এর দশকে সার্বিয়ার সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ২০০৮ সালে কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এরপর থেকেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে কোশেশ করে যাচ্ছে প্রিস্টিনা। সার্বিয়া তার সাবেক প্রদেশটির স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করলেও বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে কসোভো।
অপরদিকে, সার্বিয়ার মিত্র রাশিয়া ও চীন কসোভোর স্বাধীনতাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এ দেশ দুটি ভেটো দিয়ে কসোভোকে সংস্থাটির সদস্য হতে বাধা দিচ্ছে।
জাতিসঙ্ঘে সদস্যপদ প্রাপ্তিতে গত মাসেও কসোভোর বিরোধিতা করে এসেছে ইসরাইল। তবে কূটনীতিক সম্পর্ক হওয়ার পর, এ চিত্রের পরিবর্তন হয়েছে। বিনিময়ে আন্তর্জাতিক মতামত উপেক্ষা করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিতর্কিত নীতি অনুসরণ করলো কসোভো।
তুরস্কের মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেই শুধু নয়, ইউরোপেও কসোভোর এ সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়েছে। ইতোমধ্যে প্যালেস্টিনিয়ান লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াসেল আবু ইউসুফ বলেছেন: জেরুজালেমে কসোভোর দূতাবাস উদ্বোধন জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাবের সাথে সাংঘর্ষিক। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের দাবিকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছে।
দু রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিন অধীকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দাবি করে। ইসরাইলের সাথে কূটনীতিক সম্পর্ক থাকা বেশিরভাগ দেশের দূতাবাস দেশটির সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে। ১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর, পুরো শহরটিকে ইসরাইল একীভূত করে নিয়ে নিজেদের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। ট্রাম্প সমর্থিত চুক্তি মোতাবকে, ইসরাইল কসোভোর সাথে তার এ নতুন সম্পর্ককে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ প্রক্রিয়ার একটি অংশ বলে মনে করছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই।