আল্লাহুতা’লা জাহের (প্রকাশিত) ও বাতেন (গোপন) কীভাবে?
আল্লাহুতা’লা জাহের (প্রকাশিত) ও বাতেন (গোপন) উভয়ই – যা তিনি তাঁর কিতাবে আমাদেরকে পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছেন (৫৭:৩)।
এখন কেউ প্রশ্ন করতে পারেন – তিনি জাহের হলে, আমরা তাঁকে দেখি না কেন? আমার উত্তর হচ্ছে – আল্লাহুতা’লা দুনিয়াবাসীর কাছে বাতেন বা গোপন। তাই, তিনি তাঁর পয়গম্বরগণকে (’আলাইহিমুস সলাতু ওয়াস সালাম) জ্বীন ও মানুষ জাতির কাছে তাঁর অস্তিত্ব বা সত্ত্বার পয়গাম বা জানান দিয়ে পাঠিয়েছেন – যা ঈমান বা বিশ্বাসের বিষয়; প্রমাণের বিষয় নয়, অর্থাৎ বিজ্ঞান ও দর্শন দিয়ে তাঁর অস্তিত্ব বা সত্তা প্রমাণ করা যায় না; অনুমান করা যায় মাত্র। কেননা, বিজ্ঞান ও দর্শনের দৌড় বা সীমাবদ্ধতা তাঁর অস্তিত্ব বা সত্তার নাগাল পেতে ব্যর্থ। নইলে, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকরাই যথেষ্ট হতো; পয়গম্বর দরকার হতো না।
আর জান্নাতবাসীর কাছে আল্লাহুতা’লা পূর্ণিমার চাঁদ বা গ্রীষ্মের ভর দুপুরের মেঘমুক্ত আকাশের সূর্যের মতোই জাহের বা প্রকাশিত বা দৃশ্যমান হবেন – যা হুজুরে পুরনূর (সল্লাল্লাহুতা’লা ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্পষ্টভাবেই বলেছেন; আল-কুরআনের বেশ কয়েক জায়গায়ও দীদারে এলাহী কথা পরিস্কারভাবেই রয়েছে।
মোট কথা, আল্লাহপাক দুনিয়াবাসীর কাছে বাতেন আর বেহেশতবাসীর কাছে জাহের। আর আমাদের তথা দুনিয়াবাসীর দায়িত্ব হচ্ছে, তাঁর ‘জাহের’ ও ‘বাতেন’ সিফাতে একীন বা দৃঢ় ঈমান রাখা।
আরেকটি কথা – আল্লাহ ও বান্দার মাঝে যে পর্দার কথা বলা হয়, এ সম্পর্কে যে যা-ই বলুক না কেন – আমি মনে করি, তা আলাদা কিছু নয়, বরং বান্দার সীমাবদ্ধতাই ঐ পর্দা; অর্থাৎ আল্লাহপাক দুনিয়াবাসীকে তাঁকে দেখার ক্ষমতা দেননি – এটিই তাঁর ও আমাদের মাঝে পর্দা। তবে জান্নাতবাসীকে ঐ ক্ষমতা দেবেন। ফলে, তখন ঐ পর্দা অপসারিত হবে। প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আল্লাহুতা’লা সম্পর্কে এটিই আমার আকীদা। ওয়া আল্লাহু ও রাসুলুহু আ’লামু।