ইরাক সম্পর্কে আর একটা খবর গতকাল ছিল, “ইরাকে ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্টের কাজ করবে চীনা কোম্পানি।” এই খবরে বিশ্লেষণে একটু পরে আসছি।
ইরাকে এই মুহুর্তে সফর করছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার, সেনাপ্রধান ইয়াসির হুলেন এবং টপ জেনারেলরাসহ বড় এক দল সামরিক প্রতিনিধি।
হুলুসি আকারের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করবেন, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা, প্রেসিডেন্ট, সেনাবাহিনীর প্রধানসহ টপ জেনারেল এবং স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সাথে।
হুলুসি আকারের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য তুরস্ক ও ইরাক সীমান্তে PKK সন্ত্রাসীদের ঠেকানো। বাইডেন ক্ষমতায় আসছে। ২০১৫ সালের দিকে বাইডেনের মাস্টার প্লান ছিল PKK দের জন্যে আলাদা একটা কুর্দী রাস্ট্র করা। এই রাস্ট্র হবে সিরিয়া, তুরস্ক, ইরান এবং ইরাকের সীমানা নিয়ে। প্রাথমিকভাবে সিরিয়া এবং ইরাকের কিছু অংশ নিয়ে হওয়ার কথা। এরপরে ধীরে ধীরে তুরস্ক ও ইরানের অংশ নিবে।
আমেরিকার লাভ কি আলাদা পিকেকে কুর্দীদের রাস্ট্র করে দিয়ে?
ইসরায়েলকে সুবিধা দেওয়া। বামপন্থী কুর্দী রাস্ট্র হলে তা হবে ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ট এবং এর মাধ্যমে মুসলিমদেশগুলোকেও চাপে রাখবে এবং ইসরায়েল মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।
হুলুসি আকার মূলত এজন্যেই ইরাক সরকারের সাথে ফাইনাল একটা আলোচনা করবে। এবং যদি আমেরিকা এই রকম প্লানিং বাস্তবায়ন করে, তাহলে দুই দেশ একসাথে কাজ করবে।PKK তুরস্ক ও ইরাক দুই দেশের জন্যেই বিপদজনক।
তুরস্ক গত ৪-৫ মাস আগে PKK সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ইরাকের অভ্যন্তরে বেশকয়েকটা অপারেশন চালিয়ে আসছে। এবং তুরস্ক ইরাক সীমান্ত প্রায় ক্লিয়ার করেছে।
তুরস্কের এই অপারেশনে ইরাক সরকারের গ্রিন সিগনাল আছে। যদি অফিসিয়ালি কিছুটা প্রতিবাদ জানিয়েছে। মূলত তুরস্ক ইরাকের সাথে প্রায় ৪০ বছর আগে করা একটা সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তির আওতায় ইরাকের ভেরতে অপারেশন চালাচ্ছে।
এছাড়া তুরস্ক চাইবে ইরাকের সাথে সামরিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করতে। ইরাক যেন তুরস্কের ডিফেন্স প্রডাক্ট কেনে এজন্যে হয়ত চুক্তি বা সমঝোতা হতে পারে। এছাড়া ইরাকের সেনাদের ট্রেনিং দেওয়ার ব্যাপারেও সমঝোতা চুক্তি হতে পারে।
চীনা কোম্পানি ইরাকের দক্ষিণে ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট করবে। পাওয়ার প্লান্ট, সিরামিস ফ্যাক্টরি, টাইলস ফ্যাক্টরিসহ বেশকিছু বড় বড় ইন্ড্রাস্ট্রি তৈরি করবে।
ইরাকে অর্থনীতিতে তুরস্কের পাশাপাশি চীনের প্রভাব বাড়ছে। আর সামরিক ক্ষেত্রে রাশিয়ার দিকে ঝুকছে।
ইরাক সরকারও পিকেকে সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেয় না। এজন্যে আমেরিকান বাইডেন ক্ষমতায় আসার আগেই একটা আলাদা বলয় তৈরি করে নিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকা ও ইসরায়েলের খেলা বন্ধ করতে হলে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্য খুব দরকার, না হলে আমেরিকা ও ইসরায়েল মিথ্যা জুজু (ভয়) দেখিয়ে মুসলিম দেশগুলোর উপর প্রভুত্ব ধরে রাখবে। সবচেয়ে বড় দুইটা জুজু হচ্ছে ক্ষমতা হারানোর ভয় দেখানো- ইখওয়ান তোর ক্ষমতা নিবে বা গণতন্ত্র তোর ক্ষমতা নিবে।
আর একটা হচ্ছে শিয়া ইরান তোদের মিসাইল মেরে ধবংস করবে। আদৌ ইরানের মিসাইল স্বক্ষমতা এত নেই।
এই জুজুর ভয়েই মধ্যেপ্রাচ্যের শাসকগুলো আমেরিকার গোলামী করছে বছরের পর বছর ধরে।