গত ২৮ শে অক্টোবর তুরস্কের ডিফেন্স ইন্ড্রাস্টির একটি প্রেস রিলিজ হয়েছে। মার্কিন নির্বাচনী ডামাডোল আর নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধের হট্টগোল না থাকলে সংবাদটি হয়ত বিশ্বমিডিয়ার হট টপিক হত।
তুর্কি জলযান ও পেট্রোলবোট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আরেস শিপইয়ার্ড (Ares shipyard) ও প্রতিরক্ষাপ্রযুক্তি নির্মাতা মেটেকসান ডিফেন্স (Meteksan Defence) যৌথভাবে উলাক প্রকল্প ঘোষণা করেছে।
তুর্কি উলাক শব্দের অর্থ হচ্ছে মেসেঞ্জার বা বার্তাবাহক। এই প্রকল্পের আওতায় তারা ‘আর্মার্ড আনম্যান সারফেস ভ্যাহিকল’ বা AUSV তৈরির সংবাদ দেয়। সোজা বাংলায় বললে সশস্ত্র ড্রোন, তবে তা আকাশে উড়বে না, বরং জলেস্থলে চলবে।
এই প্রকল্পের প্রথম অস্ত্র হিশেবে গত আগস্টে তারা উলাক বোটের নকশা চূড়ান্ত করেছে। বডি তৈরির কাজ শেষ। এখন সাজুগুজু চলছে। আগামি ডিসেম্বরে এটি ভূমধ্যসাগরে নামানো হবে। ২০২১ সালের শুরুরদিকে এটির ফায়ারিং ও অন্যান্য পরীক্ষা চালানো হবে।
উলাক ওয়াটারড্রোনের রেঞ্জ হবে ৪০০ কিমি, অর্থাৎ চারশ কিলোমিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। গতি ঘন্টায় ৬৫ কিমি। ভূমি থেকে, জাহাজ থেকে কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের ফ্রিগেট-জলযান থেকে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
দুই টন ওজনের অস্ত্র বহন করতে পারবে এটি। চারটি লেজার গাইডেড সিরিত মিসাইল আর দুটি লং রেঞ্জ এন্টি ট্যাংক মিসাইল থাকবে। সিরিত মিসাইলের রেঞ্জ ৮ কিলোমিটার। আর এন্টি ট্যাংক মিসাইলগুলো বর্তমানে তুর্কি এ্যাটাক হেলিকপ্টারগুলোতে ব্যবহৃত হয়।
অস্ত্র দুটি বানায় তুরস্কেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান রকেটসান। অস্ত্রের পাশাপাশি উলাক ওয়াটারড্রোনে থাকবে গোয়েন্দাবৃত্তি চালানো, সিগন্যান সিস্টেম জ্যামিংসহ অন্যান্য প্রযুক্তি।
আক্রমণ ছাড়াও তাই শত্রুবহরে নজরদারি চালানো যাবে। ভবিষ্যতে এতে মাইন ডিটেক্টর, এন্টি সাবমেরিন মিসাইল, ও মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সংযুক্ত করা হবে।
তুরস্কের এই প্রকল্প সফল হলে নিঃসন্দেহে শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক হওয়ার যে স্বপ্ন এরদোয়ান দেখে, তা আরেকধাপ এগিয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় যে সফলতাটা আসবে- ভূমধ্যসাগরে। ফ্রান্স-গ্রিসের দাদাগিরি ফুরাবে।
হয়ত খায়রুদ্দিন বারবারোসার উত্তরাধিকারিরা আরেকবার ভূমধ্যসাগরের নিয়ন্ত্রণ নেবে।
Feature Image Source: defensenews.com