মাঝে মাঝেই দেশ ও সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল হয়ে ওঠে সমাজে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের বিরুদ্ধে। মানুষ তাদের রাগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিজের মতো করে। কিন্তু তাতে কি ধর্ষণ হওয়া বন্ধ হয়েছে, নাকি বন্ধ হবে ?
নাহ, বন্ধ হয় নি এবং হবেও না। গতকাল ধর্ষণ হয়েছে, আজও হচ্ছে এবং আগামীকালও হবে।
তাহলে এর প্রতিকার কি ? কীভাবে বন্ধ করা যাবে ধর্ষণ ? আসুন আলোচনা করা যাক।
প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে কোন সমস্যার সমাধান করতে গেলে তার প্রধান কারণগুলি আইডেন্টিফাই করতে হয় এবং সেই অনুযায়ী সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতে হয়।
কিন্তু ধর্ষণের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে একটি শ্রেণীর মানুষ “ধর্ষণের জন্য ধর্ষিতার পোশাক দায়ী” টাইপের অতি সরলীকরণ থিওরী আউড়াতে থাকেন আবার অপর একটি শ্রেণী একমাত্র ধর্ষককেই দায়ী করে ধর্ষণ ঘটার মূল কারণগুলি এড়িয়ে যান।
আগে বাড়ার আগে এই চরম বিতর্কিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি,
না, ধর্ষণের জন্য ধর্ষিতার পোশাক দায়ী নয়। যদি পোশাক দায়ী হতো তাহলে কয়েক মাস বয়সী শিশু থেকে নিয়ে ৮০/৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা নারী, অথবা বোরকা পরিহিতা নারীরা ধর্ষিতা হতেন না। এছাড়া দেখা যায় মানুষ গোরু ও ছাগলকেও ধর্ষণ করছে। তাদের পোশাক কীভাবে দায়ী হবে?
ক্রমাগত দেখতে থাকা অশ্লীল ছবি ও ভিডিও যে একজন ধর্ষকের মনে ক্রিয়া করে তাকে ধর্ষণে উদ্দীপ্ত করে তা পরবর্তীতে আলোচনা করেছি।
একজন ধর্ষিতা কেবলমাত্র ধর্ষকের ভিকটিম নয়, বরং একটি অর্গানাইজড ও সিস্টেম্যাটিক করাপশনের ভিক্টিম!
ধর্ষকরা যে তাদের সেক্সের স্টিমুলেশন বা যৌন সংসর্গ করার ইচ্ছা এই ভিক্টিমদের মাধ্যমেই পেয়েছে এমন কিন্তু নয়।
যৌন উত্তেজনার উৎপত্তি (Arousal/Sexual Excitement) আর সেক্স কার সাথে করা হচ্ছে – এই দু’টোর সোর্স যে একই হওয়া জরুরী না এটা আমাদের না বোঝার তো কোন কারণ নেই।
বোঝার জন্য আমাদেরকে বেশী দূরে যেতে হবে না। হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন এর প্রসেসটা ভাবলেই বুঝতে পারবেন। যাকে কল্পনা করে হস্তমৈথুন করা হচ্ছে সে কিন্তু ওইখানে উপস্থিত নেই।
আমি বিশ্বাস করি যে ধর্ষণ একটি অর্গানাইজড ও সিস্টেম্যাটিক ক্রাইম। এবং ধর্ষণের পিছনে যে মনস্তত্ব ও অনুঘটকগুলি কাজ করে তা বিচার করে শুধু ধর্ষক নয়, কাঠগড়ায় তুলতে হবে প্রায় গোটা সমাজকেই। ঠগ বাছতে গিয়ে গাঁ উজাড় হবার মতো অবস্থা!
একটা উদাহরণ দিই – একটা কাঁচের জারে কিছু লাল পিঁপড়ে ও কিছু কালো পিঁপড়ে ভরে রাখলে কিছুই হবে না। কিন্তু কাঁচের জারটি যদি জোরে জোরে ঝাঁকিয়ে ছেড়ে দেন তাহলে লাল ও কালো পিঁপড়েগুলো একে অপরকে শত্রু ভেবে মেরে ফেলতে চাইবে। কারণ তারা জানে না যে আসল কালপ্রিট আপনি!
ধর্ষকের মনস্তত্বের পিছনেও কাজ করে এমন অনেকগুলি অনুঘটক যা তাকে ধর্ষণে প্ররোচিত করে। প্রতিটি ধর্ষণের পিছনে কাজ করে আলাদা আলাদা মনস্তত্ব ও কারণ।
লিখতে গেলে গোটা একটি থিসিস পেপার হয়ে যাবে। আমি মূল কয়েকটি কারণ বলে দিই।
আজকাল সবার হাতেই প্রায় স্মার্ট ফোন ও তাতে ইন্টারনেট রয়েছে। এবং ইন্টারনেটের একটি ক্লিকেই হাতের কাছে পাওয়া যায় পর্নোগ্রাফী। শুধু তাই নয় মহল্লার মোবাইলের রিচার্জ করার দোকানগুলি কিছু টাকা দিলেই পাওয়া যায় মেমরী কার্ড ভর্তি পর্ন ভিডিও।
পর্ণ ইন্ডাস্ট্রি হলো দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রি, যার ইনভেস্টমেন্ট ও প্রফিট হলিউডের চেয়েও বেশী। এবং সমস্ত মুখ্য পর্ণ ফিল্মের প্রোডিউসার ও কোম্পানির মালিক হলো ইহুদীরা। তারা সমাজে অশ্লীলতা ছড়ানোর জন্য ও মানুষের মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট করে দেওয়ার জন্য পর্ন ইন্ডাস্ট্রির পিছনে টাকা ঢালে।
এই প্রসঙ্গে সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর একটি বিখ্যাত উক্তি আছে-
” যদি তুমি যুদ্ধ ছাড়াই কোন দেশকে ধ্বংস করে দিতে চাও তাহলে সেই দেশের যুব সমাজের মাঝে নগ্নতা ও ব্যভিচারকে ছড়িয়ে দাও। “
১। যে কোন নারীকে যখন খুশি যেভাবে খুশি ভোগ করা যাবে। একজন নারী সে মা, বোন, খালা, সহকর্মী, শিক্ষিকা, নার্স, ছাত্রী বা সহপাঠী – যাই হোক না কেন একজন পুরুষ তাকে যখন খুশি যৌন সম্ভোগ করতে পারবে।
২। কোন স্থান কাল পাত্র দেখার প্রয়োজন নেই, যে কোন জায়গায় পুরুষ চাইলেই একজন নারীকে ভোগ করতে পারবে।
৩। শারীরিক মিলনে নারীর কোন Consent বা সম্মতি থাকবে না, পুরুষের ইচ্ছাই শেষ কথা।
৪। নারীকে যে ভাবে ইচ্ছা সেভাবে ভোগ করা যাবে, জন্তু জানোয়ারের মতো।
৫। নারীরা একটি সেক্স অবজেক্ট অর্থাৎ একজন যৌন দাসী ছাড়া কিছুই নয়। তাদের সাথে অমানুষের মতো ব্যবহার করতে হবে।
সুতরাং দীর্ঘদিন ধরে এগুলো দেখতে দেখতে পুরুষের মনে ধারণা গেঁথে যায় যে নারী মানেই হলো ভোগের বস্তু, সে শেখে Sexual Violence. তার মনে একটা ধারণা গেঁথে যায় যে যত বেশী Sexual Violence করবে তত বেশী আনন্দ পাবে।
এছাড়া সে শেখে নারীর উপর পুরুষের আধিপত্য মনোভাব অর্থাৎ Male Dominance. সে ভাবে যে নারীর কোন ইচ্ছা, মত বা সম্মতি থাকবে না। তার ইচ্ছা হলেই সে ভোগ করতে পারবে যে কোন নারীকে।
আর হারিয়ে ফেলে Empathy বা সহমর্মিতা। যার ফলে তার মধ্যে বাসা বাঁধে এক ধর্ষক।
আর আপনার বাড়ির ছেলেটার মাঝে কবে যে একজন ধর্ষক বাসা বেঁধেছে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না কারণ আপনি জানেন না যে সে পর্ণ দেখছে বা পর্ণ দেখার ফলে তার মধ্যে কি কি মানসিক পরিবর্তন এসেছে।
সিনেমা, টিভি, প্রিন্ট মিডিয়া, ব্যানার-বিলবোর্ড অথবা ডিজিটাল মিডিয়া – যে কোন মিডিয়াতে লক্ষ্য করা যায় যে নারীকে কেবলমাত্র ভোগ্যপণ্য হিসাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
ছেলেদের জাঙ্গিয়া থেকে শেভিং ক্রীম – যে কোন বিজ্ঞাপনে নারীর লাস্যময়ী উপস্থিতি অনিবার্য।
ছেলেদের পারফিউমের বিজ্ঞাপনে দেখা যায় একটি ছেলে গায়ে পারফিউম লাগালেই মেয়েরা যৌন উত্তেজিত হয়ে তার গায়ের উপর পড়ছে।
সাবানের বিজ্ঞাপনে দেখানো হয় মেয়েরা প্রায় নগ্ন অবস্থায় গোসল করছে।
গাড়ীর বিজ্ঞাপনে গাড়ীর ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে থাকে প্রায় নগ্ন স্বল্প বসনা এক নারী।
ক্রিকেট খেলায় খেলোয়াড় চার বা ছক্কা স্কোর করলে লাফাবে ঝাঁপাবে নাচবে স্বল্প বসনা নারীরা। প্রায় উলঙ্গ নারীরা এগুলো না করলে খেলা জমবে কীভাবে?
আপনি যদি শহরের বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডগুলির দিকে তাকান, সেখানেও দেখবেন প্রায় নগ্ন নারী শরীর।
সিনেমার আইটেম সং গুলিতে দেখানো হয় একটি নারীর উপর ৩০ জন পুরুষ ঢলে ঢলে পড়ছে, তার শরীরে ইচ্ছামতো হাত দিচ্ছে। এবং মেয়েটি কিছুই মনে করছে না, বরং উপভোগ করছে।
এছাড়া সিনেমাতে দেখানো হচ্ছে অহরহ Sexual Violence এবং রগরগে যৌন দৃশ্য, যেমন Fifty Shades of Grey টাইপের সিনেমাতে।
আর Netflix ও Amazon Prime এর মতো প্ল্যাটফর্ম আসার পর নতুন ট্রেন্ড হয়েছে Web Series যেখানে ইনসেস্ট সেক্স, পর্ণের মতো নগ্ন দৃশ্য একেবারেই কমন।
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত প্রতি মুহূর্তে এই বিষয়গুলো একটি দিকেই পয়েন্ট আউট করছে ও মানুষের ব্রেনকে বোঝাচ্ছে যে নারী হলো ভোগের বস্তু। তাকে চাইলেই নগ্ন করা যায়, চাইলেই প্রায় নগ্ন করে নাচানো যায়, চাইলেই হাতের মুঠোয় পাওয়া যায়। পাওয়াটা হলো তোমার অধিকার।
ঠিক যেমন সরকারী চাকরিজীবীরা মনে করে যে ঘুষ খাওয়া তার অধিকার।
তথাকথিত “নারী স্বাধীনতা” নামক মিথ্যে ও ফাঁকা বুলি আউড়ে গোটা দুনিয়া জুড়ে চলছে একটি বিরাট ইন্ডাস্ট্রি যারা নারী স্বাধীনতা বলতে বোঝায় নারী শরীরের খোলা প্রদর্শন। যে নারী যত নগ্ন হতে পারবে সে যেন তত মডার্ন, তত প্রগতিশীল।
এখন সমস্যা হলো যারা ধর্ষণের প্রতিবাদ করছেন তাদের মধ্যে একটি বিরাট অংশ এই জিনিসটি বুঝতে পারছেন না যে নারীদের এইভাবে ভোগ্যবস্তু হিসাবে উপস্থাপন করাটা মোটেই নারী স্বাধীনতা নয়, বরং ভোগবাদী পুরুষদের খেলনা পুতুলে পরিণত করছে নারীদের।
এছাড়া উপরের এই দুটি পয়েন্ট নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কথা বলতে চাই।
বিজ্ঞানী প্যাভলভ প্রথমে একটি কুকুরকে তার পরীক্ষা করে আনেন এবং তাকে খাবারের সঙ্গে পরিচিতি ঘটান। কুকুরটি খাবারে সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার লালা ক্ষরণ ঘটে। এরপর তিনি কুকুরটির সামনে খাবার দেওয়ার আগে কিছুক্ষণ ঘণ্টা বাজাতে থাকেন এবং তারপরেই তাকে খাবার দিতেন। এরকম কয়েকদিন করার পর তিনি দেখলেন কুকুরটি ঘন্টা ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে খাবার গ্রহণের জন্য সক্রিয় হয়ে উঠছে এবং সাথে সাথে তার লালা নিঃসরণে ঘটেছে।
ঠিক একই ভাবে ঘন্টা ধ্বনির মতোই অশ্লীল ছবি ও ভিডিও মানুষের যৌন উদ্দীপনা কে জাগিয়ে তোলে; স্থান কাল ও পাত্র যাই হোক না কেন।
ঘরোয়া হিংসা তথা domestic violence আমাদের সমাজে এতটাই কমন ও নর্মাল হয়ে গেছে যে পুরুষ তো বটেই মহিলারাও এখন এমন ধারণা পোষণ করেন যে পুরুষ তো গায়ে হাত তুলবেই, পুরুষ তো কটু কথা বলবেই, পুরুষ তো একটু অত্যাচার করবেই!
আর বিয়ের পণ এর দাবীতে বধূ নির্যাতন তো আমরা শিল্প ও ঐতিহ্যের পর্যায়ে নিয়ে গেছি।
সমাজের মানুষের মানসিকতা কোন স্তরে গেলে নারীকে একটি লাভজনক বস্তু হিসাবে ভাবে ? বিয়েকে একটি প্রফিটেবল ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে ভাবে?
কিন্তু এগুলো ছাড়াও এর একটা মারাত্মক কুফল আছে। সেটা হলো আমাদের গ্রাম্য সমাজে কোন মেয়েকে ধর্ষণ করা হলে ধর্ষকের সাথে তার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
একবার চিন্তা করে দেখুন ধর্ষকের সাথে বিয়ে!
অর্থাৎ ধর্ষণকে কোন চরম অপরাধ নয়, বরং আর পাঁচটা সাধারণ ভুলের মতো গণ্য করা হয়।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিলেও তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। একজন মুসলমানকে কষ্ট দেওয়া কুফরী ও কঠিন গুনাহের কাজ। নারীরাও যে মুসলমান সেটা কি ভুলে গেছি আমরা ?
প্রথমেই বলি এখন যা বলতে যাচ্ছি তা শুনে চমকে উঠবেন না। পরিবারের নারীদেরকে পর্দা করানোর হুকুম দেওয়া হয়েছে পুরুষদেরকে। এবং সেইসাথে পর্দার হুকুম নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য। কেবলমাত্র নারীর জন্য নয়।
কিন্তু ওয়াজ মাহফিল ও সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখা যায় পুরুষদের একচেটিয়া উপদেশ নারীদের পর্দা করার জন্য।
কিন্তু বিষয়টি তো উল্টো হওয়া উচিত ছিল যেহেতু পরিবারের নারীদের পর্দা করানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুরুষদের উপর। পুরুষরা পর্দা করলে তারা পরিবারের নারীদের অটোম্যাটিক পর্দা করাতো! যে পুরুষ পর্দা করে সে পরিবারের নারীদের কখনো বেপর্দা রাখবে না।
একটি বেগানা নারীর প্রতি ভুল ক্রমে দৃষ্টিপাত হয়ে গেলে পুরুষকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিতে হবে এবং দ্বিতীয় বার দৃষ্টি দেওয়া যাবে না। যদি দেয় তাহলে প্রতি দৃষ্টির জন্য একটি কবীরা গুনাহ হবে।
এছাড়া মুসলিম পুরুষদের সংযম, তাকওয়া ও পরহেজগারী এমন হওয়া উচিত যে কোন বেগানা নারী তাকে অবৈধ যৌন মিলনের পরামর্শ দিলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করবে।
কিন্তু সেটা প্রচার না করে মানুষ একটা ন্যারেটিভ তৈরী করেছে যে মেয়েরা বেপর্দা হলে বা স্বল্প বসনে চলাফেরা করলে ছেলেরা ধর্ষণ করতে পারবে না কেন ?
অনেকে উদাহরণ দেন যে আপনি বাড়িতে তালা না লাগিয়ে রাখলে চোর কেন চুরি করতে পারবে না ?
কিন্তু এটা কেমন কথা হলো! কারো কোন সম্পদ অরক্ষিত দেখলেই কি চুরি করতে হবে? এটা কেমন শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে?
“দাইয়ুস কখনো বেহেশতে যাবে না” এটি তো প্রসিদ্ধ একটি হাদীস শরীফ।
তাই আলেম সমাজ ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের উচিত ছিল পুরুষদের পর্দার বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে এ ব্যাপারেও জোর তাগিদ দেয়া।
এখন অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে পর্দা করলে কি ধর্ষণ কম হবে ?
জ্বী হ্যাঁ, কম হবে। অনেক ধর্ষণের ঘটনা আমরা শুনতে পাই যে একটি মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ডেটে গিয়ে, বা কোন পার্টিতে গিয়ে ছেলে বন্ধুদের দ্বারা, বা ছেলেবন্ধুদের সাথে বেড়াতে গিয়ে।
এখন ছেলেদের ও মেয়েদের এই ফ্রি মিক্সিং বন্ধ করতে পারলে ধর্ষণের ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে কারণ পর্দা প্রথার ফলে ধর্ষক সেই মেয়েটি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে না সহজে।
শুধু এই সমস্ত ক্ষেত্রে নয়, যেখানে পুরুষ ও নারীর অবাধ মেলা মেশা হয় যেমন অফিসে, কারখানাতে ইত্যাদি জায়গায় সেখানে পর্দা চালু করলে নিশ্চিতভাবে ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে।
আমাদের বিচার ব্যবস্থা এতই ধীর গতির ও শাস্তির প্রক্রিয়া এতই কঠিন যে ধর্ষকের শাস্তি কখনো উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায় না যাতে পোটেনশিয়াল রেপিস্টদের মনে একটা ভয় তৈরি হবে। এই বিষয়টি ধর্ষণে অনুঘটক হিসাবে কাজ করে বলে মনে করি কারণ শাস্তির কোন ভয় থাকে না।
তাই ধর্ষণ বন্ধ করতে গেলে কেবলমাত্র ধর্ষককে বা নারীর পোশাককে দোষ না গিয়ে ধর্ষণের অনুঘটক হিসাবে কাজ করা গোটা সিস্টেমকে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
যদি সত্যিই ধর্ষণ বন্ধ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে এটিই একমাত্র উপায়। আর যদি কেবলমাত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে সুশীল হওয়ার ইচ্ছায় ধর্ষণবিরোধী পোস্ট স্ট্যাটাস বা স্টোরি দেন, তাহলে মনে রাখবেন এর শিকার হতে পারেন আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ।