প্রথমে একটি প্রশ্ন করি, আচ্ছা বলুনতো এই মাজারটা কেন ভাঙ্গা হচ্ছে? জানেন কিছু? অনেকেই জানেন না। জানেন না, এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু জানতে না চেয়েই, কয়েকজন থেকে শুনে শুনেই ধিক্কার, প্রতিবাদ, সরকার পতনের মত হুমকি ঝাড়া স্ট্যটাস দিয়ে ফেইসবুক গরম করা আমার কাছে বোকামির শামিল।
আসল কথায় আসি। আজ সকালে স্থানীয় দোকানদার, গাউসিয়া কমিটির ভাই এবং অনেক পরিচিতদের সাথে আলাপ করে জানতে পারলাম যে, মূল মাজার ছাড়া আরো কিছু অংশ সরকারী জায়গা। যা মাজার কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে দখল করেছে ( মাজারেও অবৈধ দখল। সুন্নিদেরকে লালসালু বলে গালি না দিয়ে কী দিবে)। পরবর্তীতে এই প্রসঙ্গে প্রশাসক মহোদয়ের সাথে মাজার কমিটির আলাপও হয়েছে। প্রশাসক মহোদয় তাদেরকে ভাবমূর্তি রক্ষা করে নিজেদের মত করে বর্ধিত অংশ ভাঙ্গে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সাথে এও বলেছেন, সিটি কর্পরেশনের অর্থায়নে আরো সুন্দররূপে মাজার শরিফটি পুনঃনির্মান করে দেওয়া হবে। কমিটি এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। তবে, সিটি কর্পোরেশনকে জানিয়েছে, তারা মাজারের বর্ধিত অংশ ভাঙ্গতে পারবেনা। কর্পোরেশন যেন নিজেদের মত করে ভেঙ্গে নেয়। বাস, কর্পরেশন নিজেদের মত করে ভেঙ্গে নিচ্ছে। আদব রক্ষা করে ভাঙ্গার সুযোগ হারানোর পর এটার জন্য প্রশাসনকে দায়ি করাটা অনেকটাই বোকামী। আর কর্পরেশনের হাতে এতটা সময়ও নেই যে, হাতুড়িয়ে দিয়ে টুংটাং করবে। আর কী, চালিয়ে দিল বুল্ডোজার।
মজার কথা হচ্ছে, এই ভাঙ্গনের সময় আসে পাশের কেউ বাধাও প্রদান করেনি৷ কেন করেনি? কেনই বা করবে। খোদ মাজার কমিটির দোষ, অবহেলা এবং পূর্ণ সমর্থনে এটা হচ্ছে, সেখানে কে গায়ে পড়ে ঝগড়া করবে। যার ঘর সেই যদি আগুন লাগানোর অনুমতি দেয়, এলাকার মানুষের গরজ পড়েনাই আগুন নেভাতে জান বাজি রাখার। যদিও আপনারা (না জেনেই) ফেইসবুক উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। গালির যোগ্য যারা এরা পাচ্ছে হামদরদী। পাশের নেসারিয়া মাদ্রাসা থেকেও কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। সত্যতা জানিনা, তবে উনাকে খলিফায়ে গাউসে মাইজভান্ডারি বলা হয়। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, একজন ভাণ্ডারিও আসেনি। কেউ কেন আসেনি ভাবুন তো একবার।
কেনই বা আসবে? কারো সাথেই তো তাদের সুসম্পর্ক ছিল বলে জানানেই। মাজার ছিল, দানবাক্স ছিল, টাকা আসত, ভাগ হত, বাস দিব্বি দিন কাটত। না ধর্মের জন্য কিছু করেছে, না সমাজের কোন কাজে এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, ভেতরে মাদফান সেই আল্লাহ’র ওলিও এদেরকে কবর থেকে বদদোয়াই দিচ্ছে। ওলিয়ুল্লাহগণ এসেছিলেন সমাজের দেশের দশের সংস্কারে নিজেকে বলিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ তাঁদের নাম ব্যবহার করেই, আপনজনেরা বা দায়িত্ববানরা আত্মোন্নয়নে ব্যস্ত। গাউসিয়া কমিটির ভাইয়েরা হাজার চেষ্টায়ও সেখানে খতমে গাউসিয়া চালু করতে পারেনি। আল্লাহ’র ওলিদের সম্মান রক্ষার্থে যারা কাজ করে এমন কারো সাথেই তাদের সুসম্পর্ক ছিলই না।
যারা আজ ফেইসবুক উত্তাল করছেন, আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের হৃদয়ে তাজিমে ওলিয়ুল্লাহ জিন্দা আছে। কিন্তু আবেগের চোখ দিয়ে না দেখে বাস্তবতার চোখে দেখুন। আসল দোষীদের নিন্দা জানান। ঝাটার বাড়ি দিয়ে তাড়ান। তবেই, লাভবান হবেন।
পুরো লেখায় কোন তথ্য ভুল মনে হয়ে থাকলে সেটার দায়ভার সম্পূর্ণ আমার। সরাসরি দেখিয়ে দিবেন। ভুল প্রমাণ হলে শুধরে নিব।
পছন্দের আরো লেখা