সম্প্রতি NTV এর একটি সিরিয়ালে ৬৩ নম্বর এপিসোডে “Monday You Bastard” লেখা টি শার্ট নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক! কিন্তু এটি কোন নতুন বিষয় নয়, কাফিরদের অনেক পুরানো ষড়যন্ত্র। তারা দীর্ঘদিন ধরেই এই লেখাটা দিয়ে টি শার্ট তৈরী করে বিক্রি করছে।
৬৩ সংখ্যা ও সোমবার – দুটি জিনিসই নবীজ্বী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সম্পৃক্ত। আমরা সবাই জানি যে তিনি দুনিয়ার জমীনে তাশরীফ এনেছেন পবিত্র সোমবার দিবসে।
মুসলিমরা এই বিষয়ে না জানলেও কা*ফিররা ঠিকই খবর রাখে। যার কারণে তারা নানাভাবে সোমবারকে নিয়ে নানা প্রোপাগান্ডা করে এই দিনটিকে মানুষের ঘৃণার একটি দিন হিসাবে ব্রেন ওয়াশ করার চেষ্টা করেছে।
সোমবার দিনটিকে তারা মিডিয়াতে প্রচার করেছে ভীষণ ডিপ্রেশনের ও খারাপ একটি দিন হিসাবে, যুব সমাজকে সোমবারকে একটি বাজে দিন হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে কারণ সেদিন কাজে যেতে হয় ২ দিন ছুটির পর। পশ্চিমা দেশগুলিতে ও পৃথিবীর নানা দেশে শনিবার ও রবিবার ২ দিন ছুটি থাকে। তাহলে একটু বিচার করলে দেখা যায় যে ৫ দিন কাজ করার পর দুই দিন বিশ্ৰাম করলে তো আরো তরতাজা হয়ে যাওয়া উচিত, তাই না?
ঠিক এইরকমই আরো প্রোপাগান্ডা আছে – Monday You Bastard, Meatless Monday ইত্যাদি।
কা*ফি*ররা জানে যে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলির মধ্যে রহমত নিহিত আছে, যার কারণে কৌশলে তারা মুসলমানদের অবচেতন মনে সূক্ষ্মভাবে সোমবারের প্রতি ঘৃণাবোধ গেঁথে দিচ্ছে যাতে মুসলিমরা এই রহমত থেকে বর্জিত থাকে।
একটি জিনিস মনে রাখতে হবে যে এই ধরণের জিনিসগুলো আসলে হচ্ছে কা*ফিরদের টেস্ট কেস, যার মাধ্যমে –
১. কা*ফিররা পৈশাচিক আনন্দ লাভ করে থাকে এবং
২. কা*ফিররা পরীক্ষা করে দেখে মুসলমানদের ঈমানী শক্তি কতটুকু রয়েছে। তার কারণ ঈমানী শক্তি সর্বনিম্ন পর্যায়ে না নামলে কা*ফিররা সেই দেশ আক্রমণ করে না।
এখন আপনারাই প্রমাণ করবেন প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের মাধ্যমে আপনাদের ঈমানী শক্তি কতটুকু অবশিষ্ট রয়েছে।
এবার আসা যাক Bastard তথা জারজ সন্তান প্রসঙ্গে। একমাত্র অবৈধ সন্তানরাই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে। এটা বোঝাতে গেলে একটি ঘটনা উল্লেখ করতে হয়।
পবিত্র মক্কা শরীফে এক কা*ফির ছিল ওলীদ বিন মুগীরা নামে। সে হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কুৎসা রটিয়ে বেড়াতো, নানাবিধ কষ্ট প্রদান করতো। ফলে মহান আল্লাহ পাক এই ওলীদের হাক্বীকত উন্মোচন করে পবিত্র সূরা ক্বলমে ইরশাদ করেন :
“(হে হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি তার কথায় কর্ণপাত করবেন না। সে (ওলীদ বিন মুগীরা) মিথ্যে শপথকারী, অপমানিত, নিন্দাকারী, পরের দোষ বর্ণনাকারী, চোগলখোর, সৎকাজে নিষেধকারী, সীমা লঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ, বদ চরিত্র এবং অধিকন্তু সে অবৈধ সন্তান।”
(পবিত্র সূরা ক্বলম শরীফ : ১০-১৩)
এইখানে জানা যায় যে যারা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে বিদ্বেষ পোষণ করে তাদের এই ১০টি দোষ থাকবে –
(১) মিথ্যা শপথকারী,
(২) লাঞ্ছিত,
(৩) পরনিন্দাকারী,
(৪) ঘুরে ঘুরে গীবতকারী,
(৫) চোগলখোর,
(৬) সৎ কাজে বাধা দানকারী,
(৭) সীমালঙ্ঘনকারী,
(৮) পাপিষ্ঠ,
(৯) বদ চরিত্র, এবং
(১০) অবৈধ সন্তান।
উক্ত ১০টি মন্দ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আয়াত নাযিল হলে পাপাত্মা, কুলাঙ্গার মুগীরা স্পষ্টভাবেই প্রথম ৯টি বৈশিষ্ট্য নিজের মধ্যে রয়েছে বুঝতে পেরে ১০ম বৈশিষ্ট্যটি জানার জন্য তার মায়ের কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করে সে অবৈধ সন্তান কি না এবং সত্য না বললে তরবারী দিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলার হুমকি দেয়।
এর জবাবে তার মা প্রকম্পিত কণ্ঠে জানায়, “সত্যি তুমি অবৈধ সন্তান। তোমার পিতা ছিল অনেক ধন-সম্পদের মালিক, কিন্তু পুরুষত্বহীন। আমাদের সন্তানাদি না হলে ধন-সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে যাবে, এই আশঙ্কায় আমি এক রাখালের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলাম। তুমি সেই অবৈধ অবস্থানের ফসল।”
সুতরাং এই ধরণের প্রোপাগান্ডাকারীরা যেন ওলীদ বিন মুগীরার আয়নায় নিজেদের দেখে নেয়।