ভাবা যায় ব্রিটিশরা মুসলিম খিলাফাহ ঘোষণা করেছিল। তাও একজন কুরাইশের নেতৃত্বে। ১৯১৪ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন গ্রেট ব্রিটেনের পক্ষ থেকে এক ইস্তেহারে ঘোষণা করা হয়- খিলাফাহ শুধুমাত্র কুরাইশদের অধিকার।
তাই ব্রিটেন চায় আরব ও মুসলিমরা কুরাইশের নেতৃত্বে প্রকৃত খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করুক। কারণ সেসময়ের উসমানি খিলাফাহ ‘কুরাইশ’ ছিল না। ফলে এটি প্রকৃত খিলাফাহ নয়। পাশাপাশি ১৯১৫ সালের এপ্রিলে ব্রিটেন আরেকটি ঘোষণাপত্রে প্রচার করে যদি কেউ মুসলিমদের পবিত্র ভূমি মক্কা-মদিনা দখলের পাঁয়তারা করে, ব্রিটেন তা প্রতিহত করবে!!
কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিপক্ষগুলো ছিল একদিকে জার্মানি-অস্ট্রিয়া, অপরদিকে ব্রিটেন-ফ্রান্স-রাশিয়া। জার্মানির সাথে উসমানি খিলাফতের সম্পর্ক ভাল ছিল। শেষ সুলতান আবদুল হামিদের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব ছিল জার্মান সম্রাট উইলহেমের সাথে। যদিও ১৯০৮ সালে সুলতানকে উৎখাত করা হয়েছিল। দেশের ক্ষমতা দখল করেছিল ইয়ং তুর্করা। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে সুলতান তখনো তার পদে ছিলেন।
তো জার্মানির পরিকল্পনা ছিল তুর্কিকে নিজেদের দলে নেবে এবং সুলতানের মাধ্যমে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ‘জিহাদের’ ঘোষণা দেওয়াবে। ফলে ব্রিটেন-নিয়ন্ত্রিত ভারত, মিশর ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশের কোটি কোটি মুসলিম বিদ্রোহ করবে। ব্রিটেনের পরাজয় ঘটবে।
তাই ব্রিটেনের প্রথম লক্ষ্য ছিল যেকোন মূল্যে সুলতানের এই আহবান যেন কার্যকর না হয় সেটা নিশ্চিত করা। এজন্য তারা আগেভাগেই মক্কার শরিফ হোসাইন বা তার মত কোন কুরাইশের নেতৃত্বে ‘প্রকৃত খিলাফাহ’ প্রতিষ্ঠার প্রচারণা শুরু করে।
এক্ষেত্রে ব্রিটিশরাই সফল। কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মুসলিমরা খলিফার আদেশে অস্ত্র হাতে নেয়নি, বরং উল্টো ব্রিটেনের পক্ষে লড়াই করেছে অনেকেই। আমাদের কাজি নজরুল ইসলামের কথাই বলা যায়। তিনিও কিন্তু ব্রিটিশ সেনাবাহিনির হয়েই লড়াই করেছিলেন। তার মত আরও লক্ষ লক্ষ যুবক লড়েছিল।
অস্থির রাজনীতি!