৩০ দিনের মধ্যেই আরব আমিরাতের পাশাপাশি বাহরাইনও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিলো। ট্রাম্প নিজেই এই ডিল নেগোসিয়েশন করেছে এবং তার টুইটার একাউন্টে ঘোষণাও দিয়েছে।
প্রথমে ধরে নেওয়া যাক এগুলো ফিলিস্তিনিকে একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার সৌদি কৌশল।
সৌদি আরবের বাদশা সালমান বলেছেন, ‘সৌদি ফিলিস্তিনের ব্যাপারে পার্মানেন্ট সল্যুশনস চায়।’ এজন্যে হয়ত কৌশলগত কারণে, সৌদির আকাশসীমা ইসরায়েলের বিমানের জন্যে উন্মুক্ত করে দিলো। এর পাশাপাশি সৌদি একেবারে পাশের ঘরের অনুগত রাস্ট্র বাহরাইনকেও বাধ্য করল ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে। ওমান, ইয়েমেন, সুদান, মরোক্কো ও কুয়েতকেও বাধ্য করবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি।
অনেক আরবরাষ্ট্র ইসরায়েলকে মেনে নেওয়ার পরেও যদি ইসরায়েল/আমেরিকা ফিলিস্থিনকে স্বাধীনতা না দেয়? তাহলে আরবরাষ্ট্রগুলো কি করবে? কিছুই করতে পারবে না। বরং ইসরায়েল আরো বেপরোয়া হবে।
কিন্তু আমার কাছে কৌশল মনে হয়ে হচ্ছে না। সৌদির রং ফরেন পলিসি। কারণ সৌদি/আমিরাতে/বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তি, খোদ ফিলিস্তিনের জনগণই মেনে নেয়নি। প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনের ভূমি কেড়ে নেওয়া ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের হাত পা বেঁধে রেখেছে অর্থনীতি, সামরিক, মৌলিক অধীকার থেকে। এজন্য সৌদি, আমিরাতে আরবের অনেক দেশ তাদের অর্থ সাহায্য দেয়।
আরব রাষ্ট্রগুলো এখনই ফিলিস্তিনের উপরে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করছে কেন? কেন ফিলিস্তিনিদের অর্থ সাহায্য দেওয়া নিতে খোটা দিবে আরব রাষ্ট্র?
সবচেয়ে বড় কথা যদি কৌশলই হত, তাহলে ইসরায়েলকে বলত, আমরা সব মুসলিম রাষ্ট্র একসাথে মেনে নেবে, যদি জেরুজালেম রাজধানী করে একটা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাস্ট্রের স্বীকৃতি দিলে।
এই চুক্তিতে মূলত লাভ হবে—
১. ট্রাম্পের নভেম্বরের নির্বাচনে ইহুদি লবিং এর পুরোপুরি সমর্থন পাবে।
২. দুর্নীতির দায়ে চিড়েচ্যাপটা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একটি গা ঝাড়া দিয়ে উঠবে।
৩. সৌদি/আমিরাত/বাহরাইনের ক্ষমতার ব্যাকআপ দিবে ইসরায়েল আমেরিকা।
এই চুক্তির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে সৌদি আরব। বিশেষ করে আমির্যাটসকে সৌদি কন্ট্রোল করতে পারবে না। ইয়েমেনে অলরেডি আমিরাত সৌদির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ইসরায়েল আমিরাত ইজিলি মিশে যাবে, কিন্তু সৌদি পারবে না। সৌদি এখন যে ইহুদি বা আমেরিকানদের উপর নির্ভর করছে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এরাই গলার কাটা হবে।
সামান্য হুথিদের ট্যাকেল দিতে ব্যর্থ সৌদির সাথে মনমালিন্য হওয়ার কারণে আমেরিকা তাদের এয়ার ডিফেন্স পেট্রিয়ট প্রত্যাহার করা বা ইয়েমেনে আমির্যাটসের ধোকা বা ইরান ও আসাদ শিয়া গং এর সাথে আমিরাতের দহরমমহরমও সৌদির অন্ধ চোখ খুলতে পারে নি।
সৌদির এই অযোগ্য, ভোগ বিলাশী, ইহুদি আমেরিকানপন্থী শাসক দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহ অবশ্যই সৌদিতে একজন যোগ্য শাসক দিবেন, যে নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে কথা বলবে, মুসলিম দেশগুলোর পাশে দাঁড়াবে, মুসলিমদের কেউ ক্ষতি করতে চাইলে তার টুটি চেপে ধরবে। মোটকথা, সত্যিকারের একটা মুসলিম নেতা হবে।
প্রিয় পাঠক, ‘দিন রাত্রি’তে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- ‘দিনরাত্রি’তে আপনিও লিখুন
পছন্দের আরো লেখা