লাইনটি মুখস্থ করেছিলাম ছোটবেলায় গায়ের পাঠশালায়, বাস্তবতার শিক্ষা পেলাম সাম্প্রতিক ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনের মাধ্যমে। হ্যা-একজন ভিক্ষুক হয়ে আমাদের শিক্ষা দিলেন নিজের খাবার কিভাবে বিলিয়ে দিতে হয়।
সুস্যাল মিডিয়াতে নাজিমুদ্দিনের কথা সবার জানা। ভিক্ষা করে জমানো এক এক করে দশ হাজার টাকা। স্বপ্ন ছিলো একটা বাড়ি করার কিন্তু তিনি দেখলেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের নিদারুণ কষ্ট। দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে স্বপ্নের দশ হাজার টাকা দিয়ে দিলেন মানুষের জন্য।
আমাদের তো দশ হাজার নয় যে পরিমান অর্থ আমাদের আছে দেশের ব্যাংকে রাখলে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বিধায় কেউ সুইস ব্যাংকের উদর ভর্তি করে, কেউ আবার গৃহের আলমারিতে নিরাপদ মনে করে।
প্রাচুর্যের মোহে আমরা আটকা পড়েছি।যার আছে ভূরি ভূরি সে আরো চায়। অট্টালিকার স্বপ্নে সকলে বিভোর। দেশের গন্ডি পেরিয়ে পরদেশে অট্টালিকা গড়ার স্বপ্ন লালন করেন অনেকে। এই চাহিদার শুরু থাকলেও শেষটা হয় নয়ন যুগল স্থায়ী বন্ধ হওয়ার মাধ্যমে।
সাড়ে তিন হাত ভূমিতে নিজেকে জড়িয়ে নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই স্বপ্ন স্থায়ী হয়। কিন্তু কী হবে এই প্রাচুর্যে?
হ্যা, প্রভু এ কথাটি বলেছেন পবিত্র কুরআনে।
সূরা তাকাসুর (التكاثر), আয়াত: ১,২,৩
১. প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে।
২.এমনকি, তোমরা কবরস্থানে পৌছে যাও।
৩.এটা কখনও উচিত নয়। তোমরা সত্ত্বরই জেনে নেবে।
কী হবে অর্থ, প্রাচুর্য, সম্পদের পাহাড় গড়ে? মৃত্যুর সাথে সবকিছু বিলীন হয়ে যাবে।তাই আখি যুগল বন্ধ হওয়ার পূর্বে ‘সদকায়ে যারিয়াহ’ শব্দের সাথে পরিচয় হওয়া আবশ্যক। নিজের নাম খোদাই করুন দানের দপ্তরে।তা যেন হয় গোপনে।
চলুন না, ইহ নয় পরকালের প্রাচুর্যের মোহে রবের সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যাস্ত হয়ে যায়। মুমিন বান্দা মৃত্যুর ভয়ে ভীত হয়না। তাঁরা সেলাই বিহীন কাফড় গায়ে জড়িয়ে নেয়ার পূর্বে মালাকুল মাউতের জন্য প্রস্তুত থাকে। আর হেসে হেসে রবের সান্নিধ্যে যায়।
সুরা তাকাসুরের তাফসির পাঠান্তে বুঝলাম, প্রভু এখানেই প্রাচুর্যে গাফেল জাতিকে সতর্ক করেছেন।
তাই তাফসিরের কাব্যিক অনুবাদটা তুলে ধরলাম।
খ্যাতির পাহাড়ে গাফেল সকল মানবজাতি
কবর পাড়ে ও আশা করে যাও সস্তা খ্যাতি।উচিত কি তব! অচিরেই জেনে যাবে
না উচিত নহে-অচিরেই সবি পাবে।দ্বিধাহীন ভাবে যদি বিশ্বাস করো তবে
আপন নয়নে দেখবে সবিই দেখবে নরক সবে।নিশ্চিত রূপে দেখবে সবিই ক্রুটির সুযোগ নাই
নিয়ামত তরে জিজ্ঞাসিত সবে বাচার উপায় নাই।
প্রিয় পাঠক, ‘দিন রাত্রি’তে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- ‘দিনরাত্রি’তে আপনিও লিখুন