উইঘুর মুসলিমদের উপর চীনের ভয়াবহ নির্যাতনের বাস্তব চিত্র বিশ্বের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে। তারপরও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারা দাবি করেছেন – বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মুসলমান হলেন এ উইঘুর গোষ্ঠী!
ন্যাশনাল রিভিউয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে। এখানে মানুষের নির্যাতনের মাত্রা সর্বগ্রাসীবাদ উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদের সমান।
লেখক জিমি কুইন বলেছেন: নতুন প্রতিবেদন ও জলজ্যান্ত প্রমাণগুলো ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের পরিচয় বহন করছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় এক মিলিয়নের বেশি উইঘুর মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক করা হয়েছে। ৩ মিলিয়ন লোককে ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ’ ও ‘পুনঃশিক্ষার’ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বেইজিং দাবি করছে, এর মাধ্যমে তারা চরমপন্থাকে বিনাশ করছে। তবে ন্যাশনাল রিভিউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে – জিনজিয়াংয়ের উপর চীনা আধিপত্যকে আরও শক্তিশালী করা। জুনের শুরুর দিকে জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলিতে গণআটক এবং জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণের বিষয়ে এক গবেষণা নিয়ে কাজ করেছিলেন জার্মান নৃবিজ্ঞানী অ্যাড্রিয়ান জেনজ। যখন সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়, তখন চীনের সরকারি মিডিয়া তার নিন্দা জানিয়ে খবর প্রকাশ করে। আর বেইজিং তার বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার কথা বলে।
চীনের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের একাধিক হাসপাতালে কর্মরত উইঘুর প্রসূতি বিশেষজ্ঞের বরাতে রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, জিনজিয়াংয়ের হাসপাতালগুলোতে উইঘুর নারীদের গর্ভপাত ও নবজাতক শিশুদের হত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ধর্মীয় বিষয়ক এক নেতা বলেন: উইঘুরদের বংশ ভেঙে দিন। তাদের শিকড় ভেঙে দিন। তাদের সংযোগ ভেঙে দিন। তাদের উৎস ভেঙে দিন।
২০১৮ সালে চীনের কংগ্রেশনাল-এক্সিকিউটিভ কমিটিতে সাক্ষ্য দিয়ে তুরসুন বলেছিলেন: আমাদের উপর নির্যাতন, আমার ছোট ছেলের মৃত্যু এবং শিবিরে অনেক নিরীহ উইঘুরের মৃত্যুর জন্যে দায়ী চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দয়া করে ব্যবস্থা নিন।