1. zobairahmed461@gmail.com : Zobair : Zobair Ahammad
  2. adrienne.edmonds@banknews.online : adrienneedmonds :
  3. annette.farber@ukbanksnews.club : annettefarber :
  4. camelliaubq5zu@mail.com : arnider :
  5. patsymillington@hidebox.org : bennystenhouse :
  6. steeseejep2235@inbox.ru : bobbye34t0314102 :
  7. nikitakars7j@myrambler.ru : carljac :
  8. celina_marchant44@ukbanksnews.club : celinamarchant5 :
  9. sk.sehd.gn.l7@gmail.com : charitygrattan :
  10. clarencecremor@mvn.warboardplace.com : clarencef96 :
  11. dawnyoh@sengined.com : dawnyoh :
  12. oralia@b.thailandmovers.com : debraboucicault :
  13. chebotarenko.2022@mail.ru : dorastrode5 :
  14. lawanasummerall120@yahoo.com : eltonvonstieglit :
  15. tonsomotoconni401@yahoo.com : fmajeff171888 :
  16. anneliese@a.skincareproductoffers.com : gabrielladavisso :
  17. gennieleija62@awer.blastzane.com : gennieleija6 :
  18. judileta@partcafe.com : gildastirling98 :
  19. katharinafaithfull9919@hidebox.org : isabellhollins :
  20. padsveva3337@bk.ru : janidqm31288238 :
  21. alec@c.razore100.fans : kay18k8921906557 :
  22. michaovdm8@mail.com : latmar :
  23. malinde@b.roofvent.xyz : lauranadeau097 :
  24. adorne@g.makeup.blue : madie2307391724 :
  25. mahmudCBF@gmail.com : Mahmudul Hasan : Mahmudul Hasan
  26. marti_vaughan@banknews.live : martivaughan6 :
  27. crawkewanombtradven749@yahoo.com : marvinv379457 :
  28. deirexerivesubt571@yahoo.com : meridithlefebvre :
  29. ivan.ivanovnewwww@gmail.com : ninetuabtoo :
  30. lecatalitocktec961@yahoo.com : normanposey6 :
  31. guscervantes@hidebox.org : ophelia62h :
  32. clint@g.1000welectricscooter.com : orvilleweigel :
  33. margarite@i.shavers.skin : pilargouin7 :
  34. gracielafitzgibbon5270@hidebox.org : princelithgow52 :
  35. randi-blythe78@mobile-ru.info : randiblythe :
  36. lyssa@g.makeup.blue : rochellchabrilla :
  37. berrygaffney@hidebox.org : rose25e8563833 :
  38. incolanona1190@mail.ru : sibyl83l32 :
  39. pennylcdgh@mail.com : siribret :
  40. ulkahsamewheel@beach-drontistmeda.sa.com : ulkahsamewheel :
  41. harmony@bestdrones.store : velmap38871998 :
  42. karleengjkla@mail.com : weibad :
  43. whitfeed@sengined.com : whitfeed :
  44. basil@b.roofvent.xyz : williemae8041 :
  45. arnoldpeter933@yahoo.com : wilsonroach486 :
  46. dhhbew0zt@esiix.com : wpuser_nugeaqouzxup :
পবিত্র জমজম কূপের বিস্ময়কর ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য: প্রথম পর্ব
শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩, ০২:৪২ অপরাহ্ন

পবিত্র জমজম কূপের বিস্ময়কর ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য: প্রথম পর্ব

সাইফুল ইসলাম রুবাইয়াৎ
  • আপডেট সময় : রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০
  • ৭৮২ বার পড়া হয়েছে
zamzam-well-mecca-makka

বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান জমজমের পানিকে তাবাররুক মনে করেন। প্রতি বছর লাখ লাখ হজযাত্রী হজ বা উমরা শেষে এ পানি নিয়ে দেশে ফেরেন। সৌদি আরবের ভৌগলিক জরীপের আওতায় জমজম স্টাডিজ এন্ড রিসার্চ সেন্টার রয়েছে। তারা এ কূপের মান, গভীরতা, অম্লতার মাত্রা বা তাপমাত্রার দিকে নিয়মিত নজর রাখে।

পবিত্র জমজম কূপের লম্বা ও বিস্ময়কর ইতিহাস রয়েছে! আল্লাহুতা’লার হুকুমে হযরত ইব্রাহীম তাঁর দ্বিতীয়া স্ত্রী হযরত হাজেরাকে শিশু ইসমাঈলসহ একটি থলেতে কিছু খেজুর ও এক মশক পানি দিয়ে মরুভূমি মক্কায় একটি বড় গাছের নিচে রেখে যান। ঐ খাবার খেতেন মা হাজেরা। আর শিশু ইসমাঈল খেতেন মার দুধ। কিন্তু দু’দিনেই খাবার ফুরিয়ে যায়। মা হাজেরার দুধও শুকিয়ে যায়। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় শিশু ইসমাঈল মাটিতে কাতরাতে থাকেন! বাচ্চার এ করুণ দশা দেখে অসহায় মা হাজেরা সাহায্যের আশায় প্রথমে সাফা, এরপর মারওয়া পাহাড়ে ৭ বার করে ছোটাছুটি করেন। কিন্তু কিছুই না পেয়ে অগত্যা বাচ্চার মরণাপন্ন অবস্থা দেখে আল্লাহপাকের কাছে তিনি বৃষ্টি চাইলে, মহান আল্লাহ্ জিবরাঈলকে পাঠান। এ ফেরেশতা তাঁর গোড়ালি বা ডানা দিয়ে জমিনে আঘাত করলে কিংবা শিশু ইসমাঈলের কদম মুবারকের আঘাতে সেখান থেকে পানি বের হতে থাকে। মা হাজেরা হঠাৎ হিংস্র জন্তুর আওয়াজ শুনে বাচ্চার জীবনাশংকায় এবং জিবরাঈলকে দেখতে পেয়ে ওখানে ফিরে এসে দেখেন, পানি উপছে পড়ছে। শিশু ইসমাঈল পানি খাচ্ছেন! তিনি অস্থির হয়ে গর্ত খুঁড়ে এবং চার পাশে আইল দিয়ে কুয়োর মতো বানিয়ে ফেলেন; আর ঐ পানি আঁজলা ভরে ঐ মশকে জমাতে থাকেন। নবীজী ফরমান: “আল্লাহ্ ইসমাঈলের মাকে রহম করুক। তিনি বাঁধ না দিয়ে কিংবা অঞ্জলি ভরে ঐ পানি মশকে জমা না করে এমনি ছেড়ে দিলে, জমজম একটি কূপ না হয়ে ফোয়ারা হয়ে যেতো এবং পানি ছড়িয়ে পড়তো!” মা হাজেরা পানি খেয়ে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ান। এভাবে কিছুদিন যায়। ’আলাইহিমুস সলাতু ওয়াস সালাম।

একদিন ইয়েমেন থেকে জুরহুম গোত্রের একটি কাফেলা মক্কায় এসে আকাশে একই জায়গায় এক ঝাঁক পাখীকে ঘুরতে দেখে অবাক হয়ে ভাবে, মক্কার মতো পাক্কা মরুভূমিতে জলাশয় এলো কোথা থেকে? তারা লোক পাঠিয়ে সব জেনে নিয়ে মা হাজেরার কাছে এসে সেখানে বসবাসের অনুমতি চায়। তিনি এক শর্তে অনুমতি দেন যে, আবে জমজমের উপর তাদের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। তারা রাজি হয়ে সেখানে বসতি গড়ে এবং তাদের পরিজনদের খবর দিয়ে ইয়েমেন থেকে নিয়ে আসে। এভাবে ধীরে ধীরে জায়গাটিতে একটি জনপদ গড়ে উঠে। হযরত ইসমাইল তাদের সোহবতে আরবি ভাষা শিখে বড় হতে থাকেন। আর মা হাজেরাও ইন্তেকাল করেন। এরপর হযরত ইসমাঈল জুরহুম গোত্রে পর্যায়ক্রমে দু’টি বিয়ে করে সংসার পাতেন। এক পর্যায়ে তিনি তাঁর বাবা ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ’র সঙ্গে (’আলাইহিমুস সালাম) বায়তুল্লাহ শরীফ পুনঃনির্মাণে শরীক হন।

ইসমাঈল যবীহুল্লাহ’র (’আলাইহিস সালাম) ওফাতের পর, তাঁর বড় ছেলে নাবিত কা’বা শরীফের তত্ত্বাবধায়ক হন। নাবিতের ওফাতের পর, তাঁর নানার গোত্র জুরহুম বায়তুল্লাহ’র কর্তৃত্ব কেড়ে নেয়। হারাম শরীফের প্রতি সম্মান ও আত্মীয়তার খাতিরে বনি ইসমাঈল জুরহুমীদের কখনো চ্যালেঞ্জ না করলেও অন্যান্য গোত্রের সঙ্গে নানা যুদ্ধ-বিগ্রহ করে জুরহুমীরা দীর্ঘদিন কা’বা শরীফ তত্ত্বাবধান করে। এরপর তারা গোমরাহ হয়ে কা’বা শরীফের পবিত্রতা নষ্ট, মেহমানদের উপর জুলুম এবং বায়তুল্লাহ’র নামে পাঠানো সম্পদ আত্মসাৎ করতে থাকে! তখন তাদের মুরব্বী আমর ইবনে হারিছ ইবনে মুয়াঝ তাদের হুঁশিয়ার করে দেন যে, এসব অপকর্ম বন্ধ না করলে, আল্লাহ’র গযব নেমে আসতে পারে। কেননা, মক্কা জালেমদের জায়গা নয়। তিনি তাদেরকে কা’বা শরীফ তওয়াফ করে আল্লাহ’র পথে ফিরে আসতে আহ্বান জানান। কিন্তু তারা তা শোনেনি। তখন কিনানা ও খুঝা’য়া গোত্রের গুবশান শাখা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের হারিয়ে মক্কা থেকে বের করে দেয়। বিজয়ীদের পানি-বঞ্চিত করতে আমর ইবনে হারিছ গোপনে কা’বার সম্পদ থেকে ২টি সোনার হরিণ, অনেকগুলো তরবারি, বর্ম ও হাজরে আসওয়াদ দিয়ে তখন মক্কার একমাত্র পানি উৎস জমজম কূপ ভরাট করে রেখে তার গোত্রকে নিয়ে ইয়েমেন চলে যান। কথিত আছে, পারস্য সম্রাট ঐ সোনার হরিণ ২টি বায়তুল্লাহ শরীফের জন্যে হাদিয়া দিয়েছিলেন। এরপর জমজম কূপ অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে যায় এবং পরবর্তীকালে বন্যায় নিশ্চিহ্ন হয়ে বহুদিন নিখোঁজ থাকে।

আব্দুল মুত্তালিবের যুগ। ২টি বর্ণনা রয়েছে। একটিতে আছে, আব্দুল মুত্তালিব বলেন: একদিন আমি স্বপ্নে দেখি, এক ব্যক্তি আমায় বললেন: ‘তায়্যিবা খনন করো।’ জিজ্ঞেস করলাম: ‘তায়্যিবা কী?’ তিনি কিছু না বলে চলে গেলেন। পরদিন একই জায়গায় আবার স্বপ্নে দেখি, তিনি আবার আমায় বললেন: ‘বাররা’ খনন করো।’ জিজ্ঞেস করলাম: ‘বাররা কী?’ তিনি আবার কিছু না বলে চলে গেলেন। তৃতীয় দিন একই জায়গায় পুনরায় স্বপ্নে দেখি, তিনি পুনরায় আমায় বললেন: ‘মাঝনুনা খনন করো?’ জিজ্ঞেস করলাম: ‘মাঝুনুনা কী?’ এবারো তিনি কিছু না বলে চলে গেলেন। চতুর্থ দিনেও একই জায়গায় স্বপ্নে দেখি, তিনি আবারো আমায় বললেন: ‘জমজম খনন করো।’ জিজ্ঞেস করলাম: ‘জমজম কী?’ তিনি বললেন: যা কখনো শুকাবে না, যার পানি কমবে না এবং যা বহু হাজীকে তৃপ্ত করবে। কূপটি এখন গোবর ও রক্তে ভরা রয়েছে। সেখানে উই ও পিঁপড়ের বাসা আছে।’

এরপর আব্দুল মুত্তালিবকে কূপের ব্যাপারে স্পষ্টভাবে সব বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং কূপটির জায়গাও চিনিয়ে দেয়া হয়। তিনি জেগে প্রস্তুত হয়ে তাঁর ছেলে হারিছসহ কোদাল নিয়ে বের হন এবং খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন। যখন এর ভেতরের জিনিসগুলো বেরিয়ে আসে, তখন তিনি তাকবীর দেন! কুরাইশরা বুঝলো যে, তাঁর উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। তখন তারা তাঁর কাছে এসে জড়ো হলো এবং …

কুরাইশরা: হে আব্দাল মুত্তালিব, এতো আমাদের পূর্বপুরুষ ইসমাইলের (’আলাইহিস সালাম) কূপ। কাজেই, এতে আমাদেরও হক আছে। তাই, এ খোঁড়াখুঁড়িতে আমাদেরও সঙ্গে নিন।

আব্দুল মুত্তালিব: আমি তা করবো না। কেননা, এ কাজে একমাত্র আমাকেই বাছাই করা হয়েছে; তোমাদের নয়।

কুরাইশরা: আমাদের সঙ্গে ইনসাফ করুন। নইলে, আমরা আপনার সঙ্গে ঝগড়া না করে ক্ষান্ত হবো না।

আব্দুল মুত্তালিব: তাহলে, তোমরা আমাদের ও তোমাদের মাঝে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানাও।

কুরাইশরা সা’দ গোত্রের হুঝাইমা জ্যোতিষীকে মনোনীত করলে, আব্দুল মুত্তালিব তা মেনে নেন। কিন্তু ঐ জ্যোতিষী সিরিয়ার উঁচু এলাকায় থাকতো। আব্দুল মুত্তালিব আব্দে মানাফ বংশের ক-জন এবং কুরাইশের প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে নিয়ে একটি কাফেলা বানিয়ে মরু পথে উনার কাছে রওয়ানা হন। হিজাজ ও সিরিয়ার মাঝ পথে একটি মরুময় ময়দানে আসার পর, কাফেলার পানি ফুরিয়ে যায়। ফলে, তারা তৃষ্ণার্ত হয়ে নির্ঘাত মৃত্যুর মুখোমুখি হন! কুরাইশের দু’ একটি গোত্রের কাছে পানি চাওয়া হলে, তারা এই বলে তা দিতে অসম্মত হলো: আমরাও তো একই বিপদে পড়েছি। এ নাজুক পরিস্থিতিতে আব্দুল মুত্তালিব সাথীদের পরামর্শ চান।

কুরাইশরা: আমরা আপনার সিদ্ধান্তই মেনে নেবো। কাজেই, আপনি যা ইচ্ছা – আমাদের হুকুম দিন।

আব্দুল মুত্তালিব: আমার মতে, তোমাদের এখনো যা শক্তি আছে, তা ফুরানোর আগেই প্রত্যেকে নিজের জন্যে একটি করে কবর খুঁড়ো। কেউ মরলে, সাথীরা তাকে সেখানে দাফন করবে। শেষে একজন শুধু দাফনহীন থাকবে। গোটা কাফেলা দাফনহীন থাকার চেয়ে একজন দাফনহীন থাকাটা কি ভালো নয়?

কুরাইশরা: আপনি যা করতে বললেন, তা অনেক ভালো।

এরপর তা বাস্তবায়ন করে সবাই তৃষ্ণার্ত হয়ে মৃত্যুর অপেক্ষায় বসে রইলো।

আব্দুল মুত্তালিব: এভাবে চুপ করে বসে থেকে নিজেকে মৃত্যুর হাতে সঁপে দেয়াটা মোটেও ঠিক হচ্ছে না, বরং চলো – একদিকে রওয়ানা হয়ে যাই। আল্লাহ্ কোথাও হয়তো আমাদের পানির ব্যবস্থা করে দেবেন।

তারা চলতে শুরু করে। আব্দুল মুত্তালিব তাঁর বাহনে চড়ার পর, ওটা উঠতেই ওর পা’র নিচ থেকে মিঠে পানির ঝর্ণা বেরিয়ে আসে! তখন তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা তাকবীর দিয়ে নেমে পড়েন এবং সবাই পানি খেয়ে পথের জন্যে সংগ্রহও করে। আব্দুল মুত্তালিব কুরাইশের অন্যান্য সাথীদের ডেকে পানির ভাগ দেন।

কুরাইশরা: আল্লাহ’র কসম! আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। জমজম নিয়ে আপনার সঙ্গে আমাদের আর কখনো কোনো দ্বন্দ্ব হবে না। যে মহান সত্তা আপনাকে এ ধূসর শুকনো মরুময় এলাকায় পানি দিয়ে তৃপ্ত করলেন, নিঃসন্দেহে তিনিই আপনাকে জমজম দান করেছেন। আপনি সোজা আপনার কূপের কাছে ফিরে যান।

ফলে, কাফেলা ফিরে আসে। ঐ জ্যোতিষীর কাছে আর যাওয়া হয় না। এরপর থেকে কুরাইশরা আব্দুল মুত্তালিবকে জমজমের ব্যাপারে আর কোনো বাধা দেয়নি।

আরেক বর্ণনায় আছে, স্বপ্নে জমজম খোঁড়ার নির্দেশ দিয়ে আব্দুল মুত্তালিবকে আরো বলা হয়: “এরপর নির্মল ও প্রচুর পানির জন্যে দোয়া করো যেনো তা হজযাত্রীদের তৃপ্ত করতে থাকে। এ পানি যতোদিন থাকবে, ততোদিন এ থেকে কোনো ভয় ও ক্ষতির আশংকা থাকবে না।” এরপর আব্দুল মুত্তালিব কুরাইশদের খবর দেন।

আব্দুল মুত্তালিব: আমি তোমাদের জন্যে জমজম খননের নির্দেশ পেয়েছি।

কুরাইশরা: ওটা কোথায় – তা কি জেনেছেন?

আব্দুল মুত্তালিব: না।

কুরাইশরা: তাহলে আপনি আবার ওখানে ফিরে যান। এ হুকুম আল্লাহ’র তরফ থেকে হলে, তা আরো স্পষ্ট করে দেয়া হবে। আর তা শয়তানের তরফ থেকে হলে, এ ব্যাপারে আর কিছু বলা হবে না।

আব্দুল মুত্তালিব আবার ওখানে এসে ঘুমিয়ে স্বপ্নে দেখেন, এক ব্যক্তি তাঁকে বলছে: তুমি জমজম খনন করো। এতে তুমি লজ্জিত হবে না। এটি তোমার পূর্ব-পুরুষদের পরিত্যক্ত সম্পদ। এটা আর কখনো শুকাবে না এবং এর পানি আর কখনো কমবে না। মানব সমাজ হতে দূরের বাসিন্দা উটপাখীদের মতো বিপুল হাজীকে এটি তৃপ্ত করবে – যা বণ্টন করা হয় না। লোকজন এর কাছে এসে গরীব-দুঃখীদের জন্যে মানত করবে। আর এ জমজম হবে তোমার বংশধরদের জন্যে মীরাছ। এটি কোনো সাধারণ জিনিস নয়। কূপটি এখন গোবর ও রক্তে ভরে আছে।

জনশ্রুতি আছে, আব্দুল মুত্তালিবকে জমজম খোঁড়ার নির্দেশ দেয়ার সময়ে তিনি এর সঠিক স্থানটি জানতে চাইলে, তাঁকে বলা হয়: সেটি পিঁপড়ার বাসার কাছাকাছি – যেখানে কাল কাঁকে ঠোকরাবে।

ঘটনা হলো, মক্কাবাসী ‘হুজরা’ নামক জায়গায় একটি গরু জবাই করলে, গরুটি ওখান থেকে ছুটে জমজমের স্থানে এসে মারা যায়। তখন লোকজন গরুটির দরকারি অংশগুলো নিয়ে বর্জ্যগুলো ওখানে ফেলে যায়। একটি কাঁক ওখানে এসে ওগুলো ঠোকরাতে তথা খেতে থাকে।

আব্দুল মুত্তালিব সকালে উঠে তাঁর ছেলে হারিছকে নিয়ে গিয়ে পিঁপড়ার বাসা খুঁজে পান এবং সেখানে কাঁকটিকেও ওগুলো ঠোকরাতে দেখেন! জায়গাটি ছিলো ইসাফ ও নায়েলা দেবীর মাঝখানে। ওখানে কুরাইশরা পশু বলি দিতো। আব্দুল মুত্তালিব নিশ্চিত হয়ে খুঁড়তে প্রস্তুত হন। কিন্তু কুরাইশরা চলে আসে।

কুরাইশরা: আল্লাহ’র কসম! দু’ মূর্তির কাছে আমাদের পশু বলির জায়গায় তোমায় খোঁড়াখুঁড়ি করতে দেবো না।

আব্দুল মুত্তালিব হারিছকে: এদের আমার এখান থেকে তাড়িয়ে দাও। আমি স্বপ্নের হুকুম পালন করবোই।

কুরাইশরা তাঁর দৃঢ়তা দেখে আর বাধা দেয়নি। একটু খুঁড়তেই ভেতরের জিনিসগুলো বের হয়ে আসে! আব্দুল মুত্তালিব তাকবীর দেন। সবাই বুঝতে পারে যে, তিনি সত্যিই বলেছিলেন। আরো খোঁড়াখুঁড়ির পর তিনি সোনার হরিণ ২টি পান। এরপর তিনি ঝকঝকে সাদা বেশ কিছু তরবারি ও লোহার বর্মও পান। তখন …

কুরাইশরা: হে আব্দাল মুত্তালিব, এতে আপনার সাথে আমাদেরও ভাগ রয়েছে।

আব্দুল মুত্তালিব: মোটেও না, বরং তোমরা আমার সাথে একটি ইনসাফভিত্তিক মীমাংসায় আসো। আমরা এ ব্যাপারে তীর দিয়ে লটারি করবো।

কুরাইশরা: আপনি তা কীভাবে করবেন?

আব্দুল মুত্তালিব: কা’বার, আমার ও তোমাদের জন্যে দু’টি করে তীর বেছে নেবো। যার তীর যে জিনিসে গিয়ে লাগবে, তা তার হবে। আর যার তীর কোনো জিনিসে লাগবে না, সে কিছুই পাবে না।

কুরাইশরা: এটা খুবই যুক্তিযুক্ত মীমাংসা।

এরপর ২টি হলুদ তীর বায়তুল্লাহ’র, ২টি কালো তীর আব্দুল মুত্তালিবের এবং ২টি সাদা তীর কুরাইশদের জন্যে বেছে নেয়া হয় এবং কা’বার সবচেয়ে বড় মূর্তি হোবলের কাছ থেকে ছুড়তে সেগুলো একজন তীরন্দাজের হাতে দেয়া হয়। আর আব্দুল মুত্তালিব আল্লাহ’র কাছে দোয়া করতে থাকেন।

ছোড়া হলে হলুদ তীর দু’টি সোনার হরিণ দু’টিতে গিয়ে লাগে। ফলে, তা কা’বার অংশ হয়ে যায়। কালো তীর দু’টি তরবারি ও বর্মে গিয়ে লাগে। ফলে, সেসব আব্দুল মুত্তালিব পান। সাদা তীর দু’টি কোনো কিছুতেই না লাগায় কুরাইশরা কিছুই পায় না। আব্দুল মুত্তালিব তরবারিগুলো বায়তুল্লাহ’র দরজায় লাগিয়ে দেন। আর সোনার হরিণ দু’টি দরজার সামনে স্থাপন করেন। সম্ভবত তিনিই প্রথম কা’বাকে এভাবে সোনা দিয়ে সাজান। এরপর তিনি হাজীদের আবে জমজম খাওয়ানোর দায়িত্ব নেন।

জনশ্রুতি আছে, জমজম কূপ খুঁড়তে গিয়ে কুরাইশদের বাধা পেয়ে আব্দুল মুত্তালিব মানত করেছিলেন যে, তাঁর ১০ সন্তান হলে এবং তিনি থাকতে তারা বয়স্ক হয়ে তাঁর রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে, একটি সন্তানকে আল্লাহ’র নামে কা’বা শরীফের পাশে কুরবানী করবেন! তেমনটি হলে, তিনি সন্তানদের ডেকে তাঁর মানতের কথা জানান। সিদ্ধান্ত হয় যে, তীর ছুড়ে লটারির মাধ্যমে কুরবানীর সন্তানটি নির্ধারিত হবে। হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন তাঁর সবচেয়ে ছোট ও আদরের সন্তান (তখন আমির হামজা ও আব্বাসের জন্ম হয়নি – যাঁরা আব্দুল্লাহ’র ছোট ছিলেন)। লটারিতে তাঁর নামই উঠে! কিন্তু কুরাইশ নেতৃবৃন্দ এবং আব্দুল মুত্তালিবের অন্যান্য সন্তান তাঁকে জবাই করতে বাধা দেয়। নানা ঘটনায় শেষ পর্যন্ত একশ’ উট কুরবানীর বিনিময়ে আব্দুল্লাহ এ যাত্রায় বেঁচে যান।

এরপর থেকে জমজম কূপের খ্যাতি অন্যান্য কূপকে ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। উমরা ও হজযাত্রীগণ এর প্রতিই আকৃষ্ট হন, এর পানি তাবাররুক হিসেবে খান, বাড়ীতে নিয়ে যান এবং প্রিয়জনদের মাঝে বিলান। এটি হযরত ইসমাঈলের (’আলাইহিস সালাম) কূপ হওয়ায় এবং পরবর্তীকালে তাঁরই বংশধর আব্দুল মুত্তালিব তা আবিষ্কার ও সংস্কার করায় বনি আব্দে মানাফ কূপটি নিয়ে কুরাইশদের মাঝে গর্ব করতো।

 


সূত্র: ইবনে ইসহাক, ইবনে হিশাম, বুখারী, ইমাম আজরাকীর (ওফাত ২২২ হিজরী) আখবারু মক্কা ওয়া মা জায়া ফীহা মিনাল আছার, মাদারিজুন নবুয়ত, সীরাত বিশ্বকোষ ইত্যাদি।

 


দ্বিতীয় বা শেষ পর্ব: পবিত্র জমজম কূপের বিস্ময়কর ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য


 

প্রিয় পাঠক, ‘দিন রাত্রি’তে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- ‘দিনরাত্রি’তে আপনিও লিখুন

 

 


প্রিয় পাঠক, ‘দিন রাত্রি’তে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- ‘দিনরাত্রি’তে আপনিও লিখুন

লেখাটি শেয়ার করুন 

এই বিভাগের আরো লেখা

Useful Links

Thanks

দিন রাত্রি’তে বিজ্ঞাপন দিন

© All rights reserved 2020 By  DinRatri.net

Theme Customized BY LatestNews