ছোটবেলায় ট্রেনে উঠলে বুফেকার থেকে গরম গরম ঝাল কাটলেট আসত। জিহ্বা পুড়ে যেত। কিন্তু এর লোভ সামলানো ছিল কঠিন। সেই বুফেকার এক রহস্যের স্থান ছিল আমার কাছে। বড়ো হয়ে দেখলাম ট্রেনে একটা কামরা থাকে খাবার তৈরি করার। সেই কামরা থেকে গরম গরম খাবার বিভিন্ন কামরায় যায়।
২০১৪ সালে কালনী এক্সপ্রেসের খাবার গাড়িতে আগুন লাগার পর ট্রেনে চুলা জ্বালানো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে গরম খাবারের সংস্কৃতিও চলে যায় বাংলাদেশের ট্রেন থেকে। ব্রিটিশ আমলে এই খাবার গাড়ি (প্যান্ট্রিকার) রেলওয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হত। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীরাই এতে প্রবেশের অধিকার পেতেন। নিচের ছবিতে দেখানো হয়েছে কিভাবে একটা খাবার টেবিল সাজানো থাকত। পরবর্তীতে এ প্রথা উঠে যায়। খাবার গাড়ি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়।
পাকিস্তান আমল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেইলের মত অভিজাত ট্রেনে সৌজন্যমূলক ব্রেকফাস্ট দেয়া হত। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভিন্ন ক্যাটারিং সার্ভিসের মাধ্যমে খাবার গাড়ি পরিচালনা করে। ভারতে রেলওয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড (আইআরসিটিসি) প্রধান প্রধান ট্রেনগুলোর ক্যাটারিং সার্ভিস পরিচালনা করে। অপ্রধান ট্রেনগুলো ক্যাটারিং সার্ভিস ইজারা দেয়া হয়।
বাংলাদেশে একমাত্র সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনে টিকেটের সঙ্গে খাবারের দাম রাখা হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সেই খাবার পরিবেশ করা হয়। প্রতিটি খাবার গাড়িতে খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা রেলের আইনে বাধ্যতামূলক। একইসঙ্গে খাবারের বিল পরিশোধের পর যাত্রীরা রশিদ পাওয়ার অধিকার রাখেন। যাত্রীদের এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত। তাহলে ইজারাদাররা যাত্রীদের প্রতারিত করতে পারবে না।
প্রিয় পাঠক, ‘দিন রাত্রি’তে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- ‘দিনরাত্রি’তে আপনিও লিখুন