জেরুজালেমকে রাজধানী করে সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল্যে সৌদি আরব ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে বলে জানিয়েছেন সৌদি রাজপরিবারের ঊর্ধ্বতন সদস্য যুবরাজ তুর্কি আল-ফয়সাল। আজ (শুক্রবার) তিনি বেশ জোর দিয়েই একথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে, যে কোনো আরব রাষ্ট্রেরই এর জন্যে চড়া মূল্য দাবি করা উচিত।
১৩ই অগাস্ট ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে শান্তিচুক্তি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, আমিরাতের পথ সৌদি আরবও অনুসরণ করবে বলে তিনি আশা করেন।
ট্রাম্পের এমন প্রত্যাশার জবাবে সৌদি প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল সৌদি আশার্ক আল-আওসাত পত্রিকায় লেখেন: সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পথ অনুসরণের কথা বিবেচনায় নিলে যে কোনো আরব রাষ্ট্রের উচিত – এর বিনিময় মূল্য দাবি করা। আর সেই মূল্য হওয়া উচিত চড়া। ইসরাইল ও আরব দেশগুলোর মাঝে চূড়ান্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি মূল্য নির্ধারণ করেছে সৌদি আরব। আর তা হচ্ছে – প্রয়াত বাদশাহ আব্দুল্লাহর উদ্যোগ অনুসরণে জেরুজালেমকে রাজধানী করে সার্বভৌম একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করা।
৭০ বছরের বেশি সময়ের ভেতরে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) তৃতীয় আরব রাষ্ট্র হিসাবে ইসরাইলের সঙ্গে পুরোপুরি সম্পর্ক গড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে উভয় পক্ষে শান্তিচুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীর নিজেদের দখলে নেয়ার পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে।ফিলিস্তিন পশ্চিম তীরকে নিজেদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ বলেই মনে করে।
আমিরাত বলছে, ইসরাইলের এ প্রতিশ্রুতি ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রীক সমাধানের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে।
ইসরাইলের সঙ্গে উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। তবে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থাকায় ইসরাইলের সঙ্গে দেশগুলোর অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ ছিলো। আর এর প্রেক্ষাপটেই আমিরাত-ইসরাইল সম্পর্ক সম্প্রতি কয়েক বছরে উষ্ণ হয়েছিলো।
শেষমেশ ইসরাইল-আমিরাত চুক্তি হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত উপসাগরীয় আরও আরব রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের পথ অনুসরণ করতে পারে বলে জল্পনা বেড়েছে। তবে সৌদি প্রিন্স তুর্কি বলছেন, এক্ষেত্রে সৌদি আরব ইসরাইলের কাছ থেকে চড়া বিনিময় মূল্যই আশা করে।
আর আমিরাতের ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি বলেন: এর মধ্য দিয়ে রিয়াদের ঘনিষ্ঠ মিত্র আমিরাত অন্তত একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিশ্চিত করতে পেরেছে। আর তা হলো – ইসরাইলের দখলদারিত্বের পরিকল্পনা স্থগিত করা।
প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল সাবেক একজন গোয়েন্দা প্রধান এবং ওয়াশিংটনে কাজ করা সাবেক সৌদি রাষ্ট্রদূত। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের কোনো সরকারি দায়িত্বে নেই। তারপরও ‘কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ’ এর চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।