ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিবরিল (আ.) উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ জিবরিল (আ.) উপর দিকে একটি শব্দ শুনতে পেলেন এবং আকাশের দিকে মাথা তুলে বললেন, ‘এটি আসমানের একটি দরজা, যা পূর্বে কোনোদিন খোলা হয়নি; আজই খোলা হয়েছে। এই দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হলেন এবং রাসূলুল্লাহর কাছে এসে বললেন, এই হলেন একজন ফেরেশতা, যিনি আজ অবতরণ করেছেন। পূর্বে কখনো অবতরণ করেননি।
অতঃপর তিনি সালাম দিলেন এবং বললেন, ‘আপনি দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনাকে প্রদান করা হয়েছে এবং তা আপনার পূর্বে কোন নবিকে প্রদান করা হয়নি। তা হলো, সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাকারার শেষাংশ। এগুলোর মধ্যে হতে যে হরফটিই পাঠ করবেন, তাই আপনাকে দেওয়া হবে।’’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ৮০৬]
বিভিন্ন হাদিসে সূরা ফাতিহার অনেকগুলো তাৎপর্যপূর্ণ নাম এসেছে। তার কয়েকটি হলো:
• উম্মুল কুরআন (কুরআনের মূল);
• উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল);
• আস-সাব‘উল মাসানি (বারবার পঠিতব্য সাতটি আয়াত)
• আল-হামদু (যাবতীয় প্রশংসা)
• সূরাতুর রুকইয়াহ (ঝাড়-ফুঁকের সূরা)
• ফাতিহাতুল কিতাব (কিতাবের মুখবন্ধ)
হাদিসে এসেছে, বান্দা যখন নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করে, তখন আল্লাহ্ তার প্রতিটি আয়াতের জবাব দেন। [মুসলিম, আস-সহিহ: ৯০৪]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘‘যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি! তাওরাত, যাবুর, ইনজিল এবং কুরআনে এই সূরার ন্যায় অন্য কোনো সূরা অবতীর্ণ হয়নি।’’ [আলবানি, সহিহু সুনানিত তিরমিযি: ২৮৭৫; হাদিসটি সহিহ]
সহিহ বুখারিতে এসেছে, এই সূরাটিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা’ আখ্যায়িত করেছেন। [বুখারি, আস-সহিহ: ৪৪৭৪]
আবু সা‘ঈদ খুদরি (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবিগণ একবার এক সফরে ছিলেন। তখন একটি গোত্রের প্রধানকে সাপে কামড় দেয়। তারা সাহাবিগণের কাছে ঝাড়-ফুঁকের সাহায্য কামনা করে। তখন একজন সাহাবি সূরা ফাতিহা পড়ে ফুঁ দিয়ে সাপের বিষ ঝাড়েন। এতে সেই গোত্রপতি সুস্থ হয়ে যান। [বুখারি, আস-সহিহ: ৫৪০৫]
এজন্য নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সূরাকে ‘সূরাতুর রুকইয়াহ্’ (ঝাড়-ফুঁকের সূরা) বলেছেন। এই সূরা পড়ে ঝাড়-ফুঁক করলে আল্লাহ্ চাহেতো অনেক রোগ ভালো হয়ে যায়।
একটি হাদিসে এসেছে, ‘সূরা ফাতিহা বিষের জন্য শেফা বা ঔষধ।’ অন্য একটি হাদিসে এসেছে, ‘সূরা ফাতিহা সকল রোগের ঔষধ।’