পর্বতারোহী অভিযাত্রীগণের মুহুর্মুহু অভিযাত্রা এবং পর্বতজয়ের ফলে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের ক্রম নিয়ে ক্রমেই আলোচনা বেড়ে চলছে। ২০০৫ সালে বৃটিশ পর্বতারোহী অ্যামন গিঞ্জ ফুলেন (Eamon Ginge Fullen) বাংলাদেশের বান্দরবান এবং মিয়ানমার সীমান্তে একটি পর্বতচূড়ায় আরোহন করে এর উচ্চতা নির্ণয় করেন ৩,৪৯১ ফুট। শৃঙ্গটির দাপ্তরিক নাম ‘মোদক টং’ (Mowdok Taung)। তবে স্থানীয় বম ভাষায়, এর নাম ‘ত্ল্যাং ময়’ (সুন্দর চূড়া)। আবার, ত্রিপুরা ভাষায় এটি ‘সাকা হাফং’ (Saka Haphong) নামেও পরিচিত। অনেকে একে ‘মোদক মুয়াল’ নামেও অভিহিত করে থাকেন।
সাকাহাফং | বান্দরবান, Image Source: vromoninfo.com
এটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত মোদক রেঞ্জের একটি পর্বতশৃঙ্গ। গিঞ্জ ফুলেনের পর ২০০৭ সালে, ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে দেশের এভারেস্ট বিজয়ী সজল খালেদসহ একটি বাংলাদেশী অভিযাত্রী দল প্রথমবারের মতো শৃঙ্গটি জয় করে। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে, ‘দা নেচার ক্লাব’ থেকে একটি অভিযাত্রী দল এ শৃঙ্গে আরোহন করে উচ্চতা নির্ণয় করে ৩,৪৮৮ ফুট। নির্ণীত উচ্চতার পরিমাপসমূহে মতভেদ থাকলেও, এটিই যে বেসরকারীভাবে বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। বেসরকারী হিসাবে বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের নাম ও উচ্চতা ক্রমানুসারে দেয়া হলোঃ
১. সাকা হাফং / মোদক টং (৩,৪৮৮ ফুট)
২. জো-ত্ল্যাং (৩,৩৫৩ ফুট)
৩. দুম্লং (৩,৩১৪ ফুট)
৪. আইয়াং তলং (৩,২৯৮ ফুট)
৫. যোগী হাফং (৩,২৫১ ফুট)
৬. মাথাই জামা হাফং (৩,১৭৪ ফুট)
৭. কেওক্রাডং (৩,১৭২ ফুট)
৮. থিংদল তে ত্ল্যাং (৩,১৪৯ ফুট)
৯. মুখরা থুথাই হাফং (৩,১২৯ ফুট)
১০. হাজরা হাফং (৩,১০৫ ফুট)
গুগল মানচিত্রে সাকা হাফং পর্বতশৃঙ্গকে মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে দেখানো হলেও, আসলে তা বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে। USGS টপো মানচিত্র এবং রাশিয়ান টপো মানচিত্র অনুসারে, শৃঙ্গটির নাম ‘মোদক টং’। সর্ব ব্রিটিশ ভারতের ১৯৩৮, ১৯৩৯ ও ১৯৪৮ টপোগ্রাফিক মানচিত্রে, মোদক টং-ই এর দাপ্তরিক বা অফিশিয়াল নাম ছিলো। মোদক টং-কে দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসাবে সরকারীভাবে তালিকাভুক্ত করা এখন সময়ের দাবি।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া, কইজান, সারাবাংলা,
দি এশিয়ান এইজ, দি ডেইলি স্টার